ডেস্ক রিপোটঃ বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভায় গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন ষড়যন্ত্রের নীল নক্শা প্রণয়ন করছে সরকার। তারই অংশ হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সোমবার বাসদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বাম জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ। সভায় উপস্থিত ছিলেন সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম ও সহকারী সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনোয়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন নান্নু ও সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা মানস নন্দী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবীর জাহিদ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের সভাপতি হামিদুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা ফখরুদ্দিন কবীর আতিক প্রমুখ।
সভায় বলা হয়, দুর্নীতি-দুঃশাসনে সরকারের প্রতি জনসমর্থন শুন্যের কোটায় চলে গেছে, তাই অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকার সাহস পায়না। আবার একই পন্থা বারে বারে কার্যকর হয়না। এ চিন্তা থেকেই এনআইডি’র দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হচ্ছে। এনআইডি’র দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দিলে ভোটার তালিকায় নাম যুক্ত বা বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা প্রাধান্য পাবে। এক্ষেত্রে পাসপোর্ট করতে পুলিশ ভেরিফিকেশনে জনগণ যেমন হয়রানীর শিকার হয় তেমনি ভোটার তালিকায় নাম যুক্ত করতেও একটি পুলিশী বাণিজ্যের ক্ষেত্র তৈরি হবে।
প্রস্তাবে আরো বলা হয়, বর্তমান নির্বাচন কমিশনও জনগণের ভোটাধিকার রক্ষায় যে মেরুদন্ডহীনতার ও সরকারের তোষামোদকারী চাটুকার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তা সত্ত্বেও একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা কাটিয়ে তাকে সক্ষম না করে এনআইডি নিবন্ধন সরকারের নির্বাহী কর্তৃত্বে নেওয়া দেশবাসী কোন মতেই মেনে নিবেনা। কারণ এটা আগামী ২০২৩ সালের নির্বাচনে কারচুপির ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানানো হয় সভায়।
সভার অপর এক প্রস্তাবে বলা হয়, ২০২১-২২ সালের বাজেট প্রস্তাবে স্বাস্থ্য-শিক্ষা, কৃষি, কর্মসংস্থান, সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং খাতওয়ারী বরাদ্দ ও বাস্তবায়নের কোন দিক নির্দেশনা নেই। বাজেটে ধনিদের কর্পোরেট কর হ্রাস, কালো টাকা সাদা করা ও সাধারণ মানুষের উপর ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব প্রমাণ করে বাজেট ধনী তোষণ ও গরীব মারার লক্ষ্যেই সরকার বাজেটে প্রস্তাবনা দিয়েছে। সভায় উৎপানদশীল ও গণমুখী খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ দ্রুত সকল জনগণকে করোনার টিকার নিশ্চয়তা প্রদানের দিক নির্দেশনাসহ বাজেট সংশোধনের দাবি জানানো হয়।
প্রস্তাবিত বাজেট প্রত্যাখ্যান করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, কর্মসংস্থান, সামাজিক সুরক্ষায় বাজেট বরাদ্দের দাবিতে আগামী ১০ জুন সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওইদিন বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়।